অনলাইনে মোবাইল কিনে প্রতারিত শিক্ষার্থীর টাকা উদ্ধার করে দিল জেলা পুলিশ পাবনা।

অনলাইনে মোবাইল কিনে প্রতারিত শিক্ষার্থীর টাকা উদ্ধার করে দিল জেলা পুলিশ পাবনা। এইচএসসি পরীক্ষার্থী রোজ, বাড়ি পাবনা সদরের মালঞ্চি ইউনিয়নে। পড়াশোনায় খুব বেশি ভালো না হলেও সোসাল মিডিয়ায় বেশ সরব। নিজের স্মার্টফোন না থাকলেও বন্ধুদের ফোনে মাঝে মধ্যেই ফেসবুক ব্যবহার করে। এই করোনা প্যানডেমিকের সময়ে পার্ট টাইম কাজ করে কিছু টাকা সঞ্চয় করে স্মার্টফোন কেনার জন্য। এরই মধ্যে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস নামক একটি পেজ থেকে অনলাইনে মোবাইল কেনার জন্য একটা এড দ্যাখে। সেখানে নীল রঙ এর একটি Redmi Note 8 এর ছবি, দাম মাত্র ৩৫০০ টাকা, হোম ডেলিভারি সহ। এত কম দামে স্মার্টফোন তাও আবার রেডমি নোট এইট!!! লোভে পরে গেল সে,সাথে সাথেই উক্ত পেইজ এ নক্ দিল, এবং জানতে চাইল যে কিভাবে মোবাইল সেটটি সে নিতে পারবে। ওপাশ থেকে বেশ স্মার্টলি স্যার বলে সম্বোধন করে বলে যে, এই সেটটি আর বাজারে নেই, তাদের কাছে একটিই ছিল। ফোন নিতে চাইলে এখুনি বিকাশ করতে হবে। ছেলেটি রাজি হলে একটি বিকাশ নাম্বার পাঠায়।সাথ-সাথে ছেলেটি ৩৫০০ টাকা বিকাশ করে এবং হোম ডেলিভারির জন্য নিজের ঠিকানা দিয়ে দেয়। পরের দিন ফোন পাওয়ার কথা থাকলেও কোন রেসপন্স না পাওয়ায় রোজ বিজ্ঞাপনে দেওয়া নং এ ফোন দেয়। ওপার থেকে জানানো হয় যে মোবাইল সেটের ইনসিউরেন্স এর জন্য 1000 টাকা এবং ডেলিভারির জন্য 500 টাকা সহ মোট ১৫০০ টাকা পাঠাতে হবে। তাহলে ফোনটি ৫ মিনিটের মধ্যে বাসায় পৌঁছে যাবে। যেহেতু ইতোমধ্যেই ৩৫০০ টাকা দিয়ে ফেলেছে তাই উপায়ন্তর না দেখে বাকি ১৫০০ টাকা ও বিকাশ করে দেয়। বিধি বাম, এবারও হোম ডেলিভারি না আসায় আবারও ফোন দেয় সে। ওপার থেকে উত্তর , স্যার ফোন সেট টির দাম লেখার সময় ভুলে ৩৫০০/- হয়েছে আসলে দাম হবে ৪৫০০/- টাকা সুতরাং আরও 1000 টাকা বিকাশ করতে হবে। এবার ছেলেটি বুঝতে পারে যে, সে মস্ত বড় প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে। সব বুঝতে পেরে ছেলেটি প্রতারক কে ফোন দেয় এবং টাকাটা ফেরত চায়। সব শুনে প্রতারক বলে যে, তোর মতো গণ্ডমূর্খ কে যে এতক্ষণ স্যার স্যার বলেছি তার মূল্যই তো পাঠানো টাকার চেয়ে বেশি। সাথে-সাথেই ফোনটি কেটে দিয়ে বন্ধ করে দেয়। এভাবে অনলাইন প্রতারণার শিকার হয়ে ছেলেটি সাহস করে পাবনা জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, বিপিএম স্যারের নিকট অভিযোগ নিয়ে যান। পুলিশ সুপারের মৌখিক নির্দেশে কাজ শুরু করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ জনাব মাসুদ আলম। প্রযুক্তির সহায়তায় এই সংঘবদ্ধচক্র কে চিহ্নিত করতে সক্ষম হন তিনি।বিপত্তি হল প্রতারকচক্র নড়াইলনিবাসী। পরবর্তীতে ওসি, কালিয়া থানার (নড়াইল জেলা) সহায়তায় এই চক্র কে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয় , তারা টাকা ফেরচ প্রদান করে ।আজ অনলাইন প্রতারনার শিকার কলেজ ছাত্র রোজ এর হাতে তার কষ্টার্জিত সঞ্চয়ের টাকা তুলে দেন পুলিশ সুপার পাবনা। চরম বোকামির কারনে অনলাইন প্রতারণার শিকার হওয়া,টাকার অন্কও নেহাত সামান্য, সুদূর নড়াইল জেলায় অপরাধীর অবস্থান জানা সত্বেও পাবনা জেলা পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখার করানেই হাসি ফুটেছে রোজ এর মুখে। লেখা: মাসুদ আলম অতি: পুলিশ সুপার (অপরাধ)







সর্বশেষ সংবাদ
DIG Homepage